সেন্টমার্টিন ভ্রমণ গাইড।সেন্টমার্টিন যাওয়ার উপায়। Saint Martin Island tour tips
ঘুরতে কে না ভালোবাসে,আমরা সকলেই ঘুরতে ভালোবাসি।এই সুন্দর পৃথিবীটাকে ঘুরে দেখা আমাদের সবারই উচিৎ।ঘুরার জন্য বাংলাদেশ একটি উত্তম দেশ।সবুজ শ্যামল এই দেশ এর যেদিকেই চোখ যায় চোখ জুড়িয়ে যায়।বাংলাদেশ এর প্রতিটি জেলাতেই কম বেশি পর্যটন এলাকা রয়েছে।
👉সেন্টমার্টিন 👈
বাংলাদেশ এর পর্যটন এলাকা গুলোর মধ্যে কক্সবাজার জেলা অন্যতম।আবার কক্সবাজার জেলার মধ্যে সেন্টমার্টিন দ্বীপ Siant Martin's Island অন্যতম।এটি বাংলাদেশের ও একটি অন্যতম পর্যটন এলাকা।কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার একটি ইউনিয়ন সেন্টমার্টিন।সেন্টমার্টিন এর আয়তন প্রায় ১৭ বর্গকিলোমিটার।
ঢাকা থেকে সেন্টমার্টিন কত কিলোমিটার ?
ঢাকা থেকে সেন্টমার্টিন এর দূরত্ব ৪০৫ কিলোমিটার।আবার কক্সবাজার থেকে এর দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। এটি টেকনাফ উপজেলা হতে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মায়ানমার উপকূল হতে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। প্রতিবছর দেশি বিদেশি হাজার হাজার পর্যটক এখানে ঘুরতে আসে।
সব সময় আপডেট থাকতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে JOIN করুনঅপরূপ এক সৌন্দর্যের অধিকারী সেন্টমার্টিন দ্বীপ।চারিদিকে নীল জলরাশি উপরে নীল আকাশ একে করেছে অনন্য।সেন্টমার্টিন হচ্ছে একটি প্রবাল দ্বীপ।এখানে প্রচুর নারিকেল গাছ রয়েছে।তায় এর আরেক নাম নারিকেল জিঞ্জিরা Narikel Jinjira ।
এখন আমাদের মাঝে অনেকেই সেন্টমার্টিন ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন কিন্তু কিভাবে যাবে এবং কোথায় থাকবে সেটা বুঝতে পারে না।তাদের জন্যই আজকের এই আলোচনা।এখানে আমি আপনাদের সাথে সেন্টমার্টিন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
চলুন শুরু করা যাক।
আরো পড়ুন -বাংলাদেশের সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র।
সেন্টমার্টিন যাওয়ার উপায় ।
ঢাকা থেকে সেন্টমার্টিন কিভাবে যাবেন ?
সেন্টমার্টিন আমরা কিভাবে যাবো এই প্রশ্ন আমাদের মাঝে আসতেই পারে।চলেন বিস্তারিত আলোচনা করি।
সেন্টমার্টিন এ যেতে গেলে আমাদের শিপ বা জাহাজ এ করে যেতে হবে।সেন্টমার্টিন যাবার শিপ গুলো সাধারণত টেকনাফ থেকে ছেড়ে যায়। পর্যটন মৌসুমে প্রতিদিন প্রায় 5 টি লঞ্চ চলাচল করে।
তায় প্রথমেই আমাদেরকে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ এ চলে যেতে হবে।জাহাজে বা ট্রলারে করে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়া যায়।
টেকনাফ থেকে কয়েকটি শিপ সেন্টমার্টিন এর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় । আবার আপনি কক্সবাজার থেকে এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস শিপ অথবা চট্রগ্রাম থেকে এমভি বে ওয়ান শিপ এ করে সরাসরি সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন।
*ঢাকা থেকে টেকনাফ যাবার উপায়।
ঢাকা থেকে সরাসরি বাস এ টেকনাফ যাওয়া যায়।ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে টেকনাফ এর উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায়,যেমন গাবতলী,ফকিরাপুল,কলাবাগান,সায়েদাবাদ,আব্দুল্লাহপুর ইত্যাদি থেকে শ্যামলী পরিবহন,সেন্টমার্টিন পরিবহন,রয়েল কোচ,গ্রীন লাইন,তুবা লাইন ইত্যাদি অনেক বাস চলাচল করে। ঢাকা থেকে টেকনাফ যাবার ভাড়া সাধারণত 1100 টাকা থেকে 2200 টাকার ভিতর,তবে তা বাস এবং ক্লাস এর উপর নির্ভর করে। ঢাকা থেকে টেকনাফ যেতে প্রায় 10 থেকে 13 ঘণ্টা সময় লাগে।আমাদেরকে সেই হিসাব করে বাস এ উঠতে হবে ।কারণ সব জাহাজ সকাল ৯টা ৩০ এর মধ্যে ছেড়ে যায়।অনেক সময় যানজটের কারণে জাহাজ মিস হতে পারে।সে ক্ষেত্রে ট্রলার এ করে যেতে হবে।
*কক্সবাজার হয়ে টেকনাফ যাবার উপায়।
আমরা অনেকে কক্সবাজার এর সাথে সেন্টমার্টিন ঘুরতে চায়।
এমন ক্ষেত্রে আপনারা প্রথমে ঢাকা থেকে কক্সবাজার এসে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ যেতে পারেন।ঢাকা থেকে প্রতিদিনই সোহাগ,গ্রীন লাইন,হানিফ,সমলি,সৌদিয়া,ঈগল,সেন্টমার্টিন ইত্যাদি সহো আরো অনেক বাস কক্সবাজার এর উদ্দেশ্যে চলাচল করে ।ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাবার ভাড়া সাধারণ 900 টাকা থেকে 2500 টাকা মধ্যে হয়ে থাকে।তবে টা বাস ভেদে নির্ভর করে।
*কক্সবাজার থেকে টেকনাফ -
কক্সবাজার থেকে সিএনজি/মাইক্রো/জিপ/লোকাল বাস ইত্যাদি করে আপনি টেকনাফ যেতে পারবেন ।কক্সবাজার হতে টেকনাফ বাস ভাড়া সাধারণত ১৫০ টাকা এবং সিএনজি ভাড়া জন প্রতি ২৫০ টাকা নিয়ে থাকে।টেকনাফ যেতে সাধারণ প্রায় 2 ঘণ্টা সময় লাগে।তায় সকালের জাহাজ ধরতে চাইলে খুব ভোরে (৬টার আগে) কক্সবাজার থেকে রওনা দিতে হবে।
*চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফ।
চট্টগ্রাম থেকে বাস যোগে খুব সহজেই টেকনাফ যাওয়া যায়।চট্টগ্রাম থেকে রাত 12 টায় টেকনাফের উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায়।চট্টগ্রাম থেকে বাস যোগে টেকনাফ যেতে বাস ভেদে আপনার ৫০০ থেকে ১২০০টাকা খরচ হবে।
*টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাবার উপায়
নভেম্বর থেকে মার্চ এই সময়টায় টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন এর উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি শিপ বা জাহাজ চলাচল করে।শিপগুলোর মধ্যে রয়েছে কেয়ারি সিন্দাবাদ,কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন, এম ভি ফারহান,আটলান্টিক ইত্যাদি। টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যেতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা মত সময় লাগে জাহাজে।
সব সময় আপডেট থাকতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে JOIN করুনসেন্টমার্টিন যাওয়ার শিপ এর টিকেট যাওয়া আসা একসাথেই হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ভাড়া সাধারণত ৮৫০টাকা থেকে ১৬০০ টাকার ভিতরে হয়ে থাকে। তবে টা শিপ এবং ক্লাস অনুযায়ী হয়ে থাকে।টেকনাফ এর জেটি থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ৯টা ৩০ এর ভিতরে জাহাজ গুলো ছেড়ে যায়। এবং সেন্টমার্টিন থেকে বিকাল ৩ টা থেকে ৩টা ৩০ এই সময়ে ফেরত আসে। উলেক্ষ যে টিকিট করার সময় কবে ফিরবেন সেটি বলে নিতে হবে।
নভেম্বর থেকে মার্চ এই সময়ের বাইরে জাহাজ চলাচল করে না।এই সময়ের বাইরে যেতে চাইলে আপনাকে ট্রলারে করে যেতে হবে।টেকনাফ নামারবাজার ঘাট থেকে ট্রলার, স্পীডবোট,মালবাহী ট্রলার ছেড়ে যায়।ভাড়া সাধারণত ২৫০ থেকে ৩৫০ হয়ে থাকে। ট্রলার ভাড়া সিজন ভেদে কম বেশি হয়ে থাকে। ট্রলারে যেতে সময় লাগে প্রায় ৩ ঘণ্টার বেশি।আর ট্রলারে যাওয়া অনেক রিস্ক তায় জাহাজে যাওয়ায় উত্তম।
*সেন্টমার্টিনে কোথায় থাকবেন?
সেন্টমার্টিনে আসল রূপ উপভোগ করতে চাইলে আপনাকে একরাত থাকা লাগবে।আপনি দুই রাত থাকতে পারলে খুব ভালো হয়।এক্ষেত্রে আপনি ছেরা দ্বীপ Chera Dip ভালোভাবে ঘুরতে পারবেন। বেশিরভাগ পর্যটক বিকালের মধ্যেই ফেরত চলে আসে। তায় বিকালের পরে আপনি সেন্টমার্টিন ঘুরে আসল মজা টা পাবেন।আর যদি রাতে ভরা পূর্ণিমা থাকে তাহলে তো কোনো কথায় নেই।
এখন কথা হচ্ছে সেন্টমার্টিনে আপনি কোথায় থাকবেন?
সেন্টমার্টিনে রাতে থাকার অনেক ব্যাবস্থা রয়েছে।এখানে বিভিন্ন মানের হোটেল ,রিসোর্ট,কটেজ রয়েছে। আপনি ছুটির ডাইন যেতে চাইলে আগে থেকেই এসব বুকিং দিয়ে রাখা ভালো।
👉সেন্টমার্টিনে হোটেল ও রিসোর্ট গুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
🎏*সায়রি ইকো রিসোর্ট
🎏*Blue Marine Resorts
🎏*কোরাল ব্লু রিসোর্ট
🎏*অবকাশ পর্যটন
🎏*কিংশুক ইকো রিসোর্ট
🎏*ডায়মন্ড সি রিসোর্ট
~সেন্টমার্টিনে সাইকেল ভাড়া~
এখানে কয়েক জায়গা থেকে সাইকেল ভাড়া পাওয়া যায়।বিশেষ করে পশ্চিম বীচ থেকে সাইকেল ভাড়া পাওয়া যাবে।ভাড়া সাধারণত ধোনটা প্রতি ৬০-৮০ টাকার ভিতরে হয়ে থাকে।আর সাইকেল ভাড়া নিলে সাধ মিটিয়ে পুরো বীচ ঘুরে বেড়াতে পারবেন।
~সেন্টমার্টিনে কোথায় খাবেন ~
এখানকার বেশিরভাগ রিসোর্টে খাবারের ব্যবস্থা থাকে।আপনি যখন রিসোর্ট বুকিং নিবেন তখন জেনে নিন যে সেখানে খাবারের ব্যবস্থা আছে কি না।
এখানে সব জায়গাতেই সামুদ্রিক মাছের নানা খাবার এর আয়োজন থাকে। রিসোর্ট গুলোতে বার্বিকিউ করার ব্যাবস্থা থাকে।আবার এখানকার বাজারে বেশ কিছু খাবার হোটেল আছে।সেখান থেকেও আপনি খাবার খেতে পারবেন।তবে এখানে খাবার খাওয়ায় পূর্বে অবশ্যই খাবারের দাম যাচাই করে নিবেন।
👉🍴সেন্টমার্টিনে কি খাবেন?
সেন্টমার্টিনে সব চেয়ে প্রসিদ্ধ খাবার হচ্ছে ডাব।এখানকার ডাব যেমন মিষ্টি তেমন সুস্বাদু।এখানে গিয়ে কিছু না খেলেও আপনার অন্তত একটি ডাব খাওয়া উচিৎ।
মাছ প্রেমীদের জন্য এখানে রয়েছে হরেকরকম মাছের খাবার।কোরাল,সুন্দরী পোয়া,ইলিশ,রূপচাঁদা,লবস্টার ইত্যাদি হরেক রকমের মাছ পাবেন।আপনি এখানে নিজের পছন্দ মতো মাছ কিনে বার্বিকিউ করে খেতে পারবেন।আপনি এখানে কুরা খেয়ে দেখতে পারেন।দেশি মুরগি এখানে কুরা বলা হয়।এখানে আপনি আরো পাবেন লইট্যা, ছুরি,রূপচাঁদা,কাচকি ইত্যাদি মাছের শুটকি।
ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা:
Warning!
🚨🚨বিশেষ সতর্কতা,
এখানে যেসব খরচ উল্লেখ করা হয়েছে টা সময়ের সাথে পরিবর্তনশীল।তায় ভ্রমণের পূর্বে অবশ্যই বর্তমান ভাড়া ও খরচ হিসাব করে পরিকল্পনা করবেন।
আমরা যেসব প্রতিষ্ঠানের নম্বর শেয়ার করে থাকি সেখানে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন করার আগে নিজে থেকে তা যাচাই করে নিবেন।কোনো প্রকার আর্থিক ক্ষতি বা সমস্যা হলে telekiit24 দায়ী নয়।